বিদেশ ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা অথবা ব্যবসায়িক কাজে পাসপোর্ট একটি অত্যাবশ্যকীয় ডকুমেন্ট। তাই অনেকেই জানতে চান– ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায় বা ই পাসপোর্ট করতে দীর্ঘ কতদিন সময় লাগে? আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ডেলিভারির সময়সীমা এবং পাসপোর্ট সংক্রান্ত সবকিছু নিয়েই থাকছে নানা প্রশ্ন।
তাই আজকের নিবন্ধে আমরা ই পাসপোর্ট পেতে কত দিন লাগে, কি কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় এবং কিভাবে দ্রুততম সময়ে এটি সংগ্রহ করা যায় সে-ব্যাপারে জানাবো খুঁটিনাটি। তাহলে আসুন জানি,ই পাসপোর্ট কতদিনে পাবেন!
ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়?
ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়? এ প্রশ্নের একাধিক উত্তর রয়েছে। কেননা বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট এর তিনটি প্রসেসিং টাইপ রয়েছে, যার উপর ভিত্তি করে সময়ের পার্থক্য হয়ে থাকে।
যদিও আমাদের দেশে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট অর্থাৎ ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর থেকে পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি হয়েছে অনেক বেশি সহজ ও দ্রুততর। তবুও নিজ প্রয়োজনে কখনো কখনো জানার দরকার হয় পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার সময়সীমা নিয়ে।
ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায় ২০২৫
দেখুন এটা নিশ্চয়ই জানেন, সাধারণত পাসপোর্ট হয়ে থাকে ৪৮ ও ৬৪ পাতার। এছাড়াও পাসপোর্টে রয়েছে তিনটি ধরন। যথা অতি জরুরী, জরুরী ও সাধারণ। এমনকি পাসপোর্ট এর রয়েছে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ বা সময়সীমা। ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট এর ব্যবস্থাপনা রয়েছে আমাদের দেশে। তাই আপনি যদি পাসপোর্ট করে থাকেন এবং সেটা ই পাসপোর্ট হয় তাহলে, কতদিন সময় লাগবে তা পাসপোর্টের ধরনের উপর নির্ভর করছে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়– যদি আপনি পাঁচ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট অতি জরুরী ধরন বেছে নিয়ে তা সংগ্রহ করতে চান তাহলে ২ দিনে তা সংগ্রহ করতে পারবেন। মানে এক্ষেত্রে আপনার সময় লাগবে মাত্র দুই দিন। কিন্তু এজন্য প্রদান করতে হবে নির্ধারিত একটি অ্যামাউন্টের টাকা।
আর এর জন্য আপনার জানতে হবে পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর ফি কত টাকা এ সম্পর্কে। কেননা অতি জরুরী, জরুরী ও সাধারণ ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন অ্যামাউন্টের টাকা প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়, যা আপনি এই দুইটি আর্টিকেল একবার পড়লে বুঝতে পারবেন।
যাই হোক এ পর্যায়ে আমরা একটি টেবিল সংযুক্ত করছি, যা এক নজরে দেখলে আপনি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন ই পাসপোর্ট কতদিনে পাওয়া যায় এ ব্যাপারে। তো নিচে দেখুন–
৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট কত দিনে পাওয়া যায়? |
|
১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট কতদিনে পাওয়া যায়? |
|
তবে কখনো কখনো সাধারণ কিছু ত্রুটির কারণে ই পাসপোর্ট হাতে পেতে ৩০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু আপনার যদি খুব দ্রুত পাসপোর্ট এর দরকার হয় তাহলে এ পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য এক্সপ্রেস বা সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিস বেছে নেবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ৪৮ পাতার পাঁচ বছর মেয়াদী এ পাসপোর্ট এর জন্য প্রদান করতে হবে ৭৫০০ টাকা আর ৬৪ পাতার হলে প্রদান করতে হবে ১০,৫০০ টাকা।
একইভাবে যদি আপনার ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ ১০ বছর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার অতি জরুরী অর্থাৎ সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিস প্রদানকারী পাসপোর্ট পেতে ফ্রি প্রদান করতে হবে নয় হাজার টাকা আর ৬৪ পাতার অতি জরুরী পাসপোর্ট পেতে প্রদান করতে হবে মোটামুটি ১২ হাজার টাকা। বিস্তারিত জানতে আরো পড়ুন পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কিত আরেকটি পোস্ট।
তো পাঠক বন্ধুরা, এখন আসুন আলোচনার শেষ মুহূর্তে আরো কিছু জিজ্ঞাসা তো প্রশ্ন ও সেগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর জানার মাধ্যমে আলোচনার সমাপ্তি টানা যাক। তবে আপনি যদি পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করতে পারেন। কেননা আমরা অনলাইনে পাসপোর্ট করার ব্যাপারে বা পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করে থাকি, যেগুলো আপনাদের জন্য উপযোগী হতে পারে।
সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ
১. ইমারজেন্সি পাসপোর্ট করতে কতদিন সময় লাগে?
✓ ইমারজেন্সি পাসপোর্ট করতে অর্থাৎ অতি জরুরী পাসপোর্ট করতে মাত্র ২ দিন সময় লাগে।
২. ইমারজেন্সি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
✓ ইমারজেন্সি পাসপোর্ট করতে সাধারণ পাসপোর্ট ও জরুরী পাসপোর্ট এর তুলনায় বেশি টাকা লাগে। যদি আপনার ই পাসপোর্ট পাঁচ বছর মেয়াদী হয় সেক্ষেত্রে ৪৮ পাতার ইমার্জেন্সি অর্থাৎ অতি জরুরী পাসপোর্ট এর জন্য ফি হিসেবে প্রদান করতে হবে ৭৫০০ টাকা আর ৬৪ পৃষ্ঠার হলে প্রদান করতে হবে ১০৫০০ টাকা।। একইভাবে যদি আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ ১০ বছর হয় সেক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি পাসপোর্ট এর জন্য ফ্রি প্রদান করতে হবে ৯০০০ টাকা এবং ৬৪ পাতার জন্য ১২ হাজার টাকা।
৩. ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ কত?
✓ বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইন ভিত্তিক। তাই আপনি ঘরে বসেই আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। এজন্য সবার প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ এ পাসপোর্ট এর অনলাইন পোর্টাল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। অতঃপর সেখানে গিয়ে এপ্লাই অনলাইন বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় কিছু ইনফরমেশন প্রদান করে নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের ফ্রি প্রদান করতে হবে। আর সাধারণ এই প্রসেসে আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এক্ষেত্রে কত টাকা খরচ পড়বে এর জন্য আমরা ইতিমধ্যে যে পোস্টগুলো পড়ার বিষয়ে জানিয়েছি তা এক নজরে দেখুন। চাইলে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম সম্পর্কিত এই পোস্টটি অনুসরণ করতে পারেন।
৪. ই পাসপোর্ট এর জন্য কোন কোন ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
✓ পাসপোর্ট করার জন্য উক্ত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম সনদপত্র প্রয়োজন। কখনো কখনো পুরাতন পাসপোর্টও প্রয়োজন পড়ে যদি থেকে থাকে।
৫. ই পাসপোর্ট এর জন্য কোথায় আবেদন করতে হয়?
✓ ই পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এর জন্য আপনাকে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। ওয়েবসাইট লিংক www.epassport.gov.bd.