৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনেকেই আগ্রহী। কেননা সময়-সীমার উপর নির্ভর করে পাসপোর্ট এর ফি আলাদা হয়ে থাকে। এজন্য যারা পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন, কিন্তু এই ব্যাপারে তেমন কিছুই জানেন না। যেমন – কিভাবে পাসপোর্ট করতে হয়, পাসপোর্ট করতে টোটাল কত টাকা লাগে, পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম অথবা পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ইত্যাদি এই বিষয়ে খুঁটিনাটি, তাদেরকে বলব আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন।
আর ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের অংশটুকু পড়ুন পাশাপাশি যদি আপনি ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা তা জানতে চান তাহলে সাজেস্কৃত লিংকে ক্লিক করুন। কেননা ইতোমধ্যে এই পোস্ট আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি
৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা তা জানার পূর্বে এটা জানা জরুরী যে, পাসপোর্ট সাধারণত কয় ধরনের হয়ে থাকে এবং সেগুলো কত পৃষ্ঠার! আপনি হয়তো জানবেন আবার হয়তো নাও জানতে পারেন যে – ই পাসপোর্ট সাধারণত তিন ধরনের বা তিন ক্যাটাগরির হয়ে থাকে।
এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সাধারণ পাসপোর্ট, অন্যটি হচ্ছে জরুরী পাসপোর্ট এবং আরেকটি হচ্ছে অতি জরুরী পাসপোর্ট। মূলত এই সময়সীমার উপর ভিত্তি করে পাশাপাশি পাসপোর্ট এর সংখ্যার উপর নির্ভর করে আলাদা আলাদা ফি গ্রহণ করা হয়। তাই আপনি যদি ৫ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে চান সেক্ষেত্রে এক ফি ধার্য করা হবে।
একইভাবে যদি আপনি ৫ বছর মেয়াদী সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপোর্ট নিতে চান সে ক্ষেত্রে আরেক সংখ্যার ফি ধার্য করা হবে। তাই বোঝার সুবিধার্থে আমরা আলোচনার এ পর্যায়ে ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি একটি ছোট্ট চার্ট তুলে ধরছি।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি | ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি
পাসপোর্ট এর ধরন | ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট ফি | ৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট ফি |
সাধারণ পাসপোর্ট/নিয়মিত পাসপোর্ট | এটি সাধারণত ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রদান করা হয়। আর রেগুলার এই পাসপোর্ট এর জন্য ফি ধার্য করা হয় ৪,০২৫ টাকা। | এটিও ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রদান করা হয়। কিন্তু ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট হওয়ার কারণে নিয়মিত এই পাসপোর্টটির ফি ধার্য করা হয় ৬৩২৫ টাকা। |
জরুরী পাসপোর্ট | যদি আপনার ১৫ দিন সময়ের আগে প্রয়োজন পরে সেক্ষেত্রে জরুরী পাসপোর্ট নিতে হবে। এ-ক্ষেত্রে ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট এর জন্য খরচ পড়বে ৬৩২৫ টাকা। কেননা ৪৮ পৃষ্ঠার 5 বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট ফি পরিমাণ ৬৩২৫ টাকা মাত্র। | একইভাবে ১৫ কর্ম দিবসের আগে পাসপোর্ট এর প্রয়োজন পড়লে জরুরী পাসপোর্ট হিসেবে মানে সাত কর্ম দিবসের মাঝে প্রদান করা হবে এমন পাসপোর্ট পেতে খরচ হবে ৮৩২৫ টাকা। আর এই পাসপোর্ট এর সম্মিলিত পাতা হবে ৬৪। |
অতি জরুরী পাসপোর্ট/সুপার পাসপোর্ট | যদি ২ কর্ম দিবসের মাঝে আপনি আপনার পাসপোর্ট হাতে পেতে চান সেক্ষেত্রে ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী এ পাসপোর্ট এর জন্য মোট ৮৬২৫ টাকা ফি জমা দিতে হবে। | অতি জরুরী পাসপোর্ট হিসেবে যদি আপনি পাঁচ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট নিতে চান সেক্ষেত্রে খরচ পড়বে ১২,০৭৫ টাকা। |
তো পাঠক বন্ধুরা, এখানে মূলত বাংলাদেশের মধ্যে এ পাসপোর্ট এর আবেদন ফি কত তা তুলে ধরা হয়েছে। যার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আপনি ভিজিট করতে পারেন www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইট এবং অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।
তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশী দূতাবাসে এই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি, সাধারণ মানুষ, শ্রমিক অথবা শিক্ষার্থী দের জন্য আলাদা হয়ে থাকে। তাই আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা আরেকটি চার্ট তুলে ধরছি। যেটা ডলারের হিসেবে।
বাংলাদেশী দূতাবাসে ই-পাসপোর্টের আবেদন ফি
সাধারণ মানুষ | শ্রমিক অথবা শিক্ষার্থী | |
৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট | বাংলাদেশী দূতাবাসে ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি রেগুলার ডেলিভারির জন্য ধার্য করা হয় $১০০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ধার্য করা হয় $১৫০ ডলার। | আর যদি শ্রমিক অথবা শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে বাংলাদেশী দূতাবাসে ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি হিসেবে ধার্য করা হয় রেগুলার ডেলিভারির জন্য $৩০ ডলার মাত্র এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য $৪৫ ডলার। |
৬৪ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট | বাংলাদেশী দূতাবাসে ই পাসপোর্ট এর আবেদন ফি ৬৪ পৃষ্ঠার ক্ষেত্রে রেগুলার ডেলিভারির জন্য ধার্য করা হয় $১৫০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ধার্য করা হয় $২০০ ডলার। | একইভাবে ৬৪ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট যদি শ্রমিক ও শিক্ষার্থী হিসেবে নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রেও রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন ফি ধার্য করা হয় $১৫০ ডলার এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির জন্য ধার্য করা হয় $২০০ ডলার। |
৫ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টে প্রযোজ্য শর্তাবলী
৫ বছরের মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য প্রযোজ্য সাধারণ কিছু শর্তাবলী আরোপ করা হয়। বাংলাদেশে মানে আমাদের দেশে ই-পাসপোর্টের জন্য প্রযোজ্য শর্তাবলী গুলো হলো:
✓ বয়স সংক্রান্ত শর্ত
👉 ৫ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট সাধারণত শিশুদের (১৮ বছরের কম বয়সী) জন্য ইস্যু করা হয়। আর প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের মেয়াদি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।
✓ আবেদনকারী সংক্রান্ত শর্ত
👉আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। আর তাই জন্ম নিবন্ধন সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান বাধ্যতামূলক।
✓ প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দানের শর্ত
👉 সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি। জন্ম নিবন্ধন সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি। অভিভাবকের পরিচয়পত্র (শিশুদের ক্ষেত্রে)। আগের পাসপোর্ট (যদি থাকে)।
✓ পাসপোর্ট ফি
👉 ফি নির্ধারণ করা হয় সাধারণ, জরুরি, এবং অতি জরুরি ভিত্তিতে। তবে হ্যাঁ, শিশুদের জন্য কম ফি প্রযোজ্য হতে পারে এক্ষেত্রে। এ বিষয়টি মাথায় রাখতে পারেন।
✓ ভ্রমণ শর্তাবলী
👉 ই-পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে নবায়ন করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমণ করা যাবে না।
✓ ডেটা ও তথ্য সংক্রান্ত শর্ত
👉পাসপোর্টে উল্লেখিত তথ্য সঠিক এবং আপডেটেড হতে হবে। ভুল তথ্য প্রদান করলে পাসপোর্ট বাতিল হতে পারে।
✓ আবেদন পদ্ধতি
👉 অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ, স্বাক্ষর) প্রদান করতে হবে।
তবে হ্যাঁ, পাঠক বন্ধুরা, আপনি যদি চান তাহলে ই-পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ তথ্য গুলো জেনে নিতে পারেন এখনই। তো এখন আসুন এ সম্পর্কে ধারণা নেই যে কিভাবে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট ফি জমা করতে হয় এবং এর ওয়ে গুলো কি কি!
৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ফি প্রদানের নিয়ম
পাঁচ বছর অথবা ১০ বছর পাসপোর্ট এর মেয়াদ যেটাই হয়ে থাকুক না কেন, আপনি যদি ফি প্রদান করতে চান তাহলে–
✓ প্রথমত– এই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হবে অনলাইনে।
✓ দ্বিতীয়ত– পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তর এর ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে।
✓ তৃতীয়ত– ফরম পূরণের কার্যপ্রক্রিয়া সমাপ্ত হলে ফি প্রদান করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতিতে। আর এ সময় অবশ্যই পেমেন্ট রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে কেননা পাসপোর্ট সংগ্রহের সময় এটার প্রয়োজন পড়ে।
✓ চতুর্থত– জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন, পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে) এবং আবেদন ফরমের পৃন্ট কপি করে সেগুলোর দরকারী নথিপত্র হিসেবে সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
আর হ্যাঁ মনে রাখবেন– পাসপোর্ট ফি ফেরত যোগ্য নয়। পাশাপাশি ফি এবং সময়সীমা অঞ্চল ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। আশা করছি এই তথ্যগুলো মাথায় থাকলে আপনার অসময়ে কাজে আসবে।
তো পাঠক বন্ধুরা, ৫ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পরেও যদি আপনার আরো কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।