১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা? যদি আপনার প্রশ্ন হয় এমন তাহলে বলবো– এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠার সংখ্যা এবং ডেলিভারির জরুরীতা কতটুকু তার ওপর। আপনারা যারা পাসপোর্ট সম্পর্কিত বিষয়ে সঠিক ধারণা পেতে চান এবং E-Passport Check Online নিয়ে আগ্রহী, তারা চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
কেননা আপনাদের কথা চিন্তা করে আমাদের টিম নিয়মিত– ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম তোলার নিয়ম, পাসপোর্টে নাম সংশোধন করার নিয়ম, পাসপোর্ট অনলাইন কপি ডাউনলোড প্রসেস এবং পাসপোর্ট সম্পর্কিত খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে অসংখ্য পোস্ট নিয়মিত পাবলিশ করে থাকে।
তাহলে আসুন জেনে নেই– আপনি যদি 10 বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট করতে চান তাহলে টোটাল কত টাকা খরচ পড়বে। পাশাপাশি ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগবে এবং আবেদনের নিয়ম কি এর সম্পর্কে A টু Z.
১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা?
বাংলাদেশে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের ফি পাসপোর্টের পৃষ্ঠার সংখ্যা এবং ডেলিভারির জরুরিতা অনুযায়ী ভিন্ন হয়, যেটা সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। তো সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এটা জানা যায়, ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের জন্য রেগুলার ডেলিভারির ফি ৫,৭৫০ টাকা। অন্যদিকে এক্সপ্রেস ডেলিভারির ফি ৮,০৫০ টাকা, এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির ফি ১০,৩৫০ টাকা।
একইভাবে আপনার ই পাসপোর্ট যদি ৬৪ পৃষ্ঠার হয় সেক্ষেত্রে এরজন্য রেগুলার ডেলিভারির ফি পড়বে ৮,০৫০ টাকা ও এক্সপ্রেস ডেলিভারির ফি পড়বে ১০,৩৫০ টাকা, এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির ফি পড়বে টোটাল ১৩,৮০০ টাকা।
আর এই ফি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বলা রয়েছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। আপনারা চাইলে সর্বশেষ আপডেট এর তালিকাটি নিচের ছবিটি লক্ষ্য করার মাধ্যমে এক নজরে দেখে নিতে পারেন।
১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ডেলিভারির সময়সূচি
১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা এ সম্পর্কে আমরা জেনেছি। কিন্তু অনেকেই আবার এই প্রশ্ন করেন পাসপোর্ট ডেলিভারির সময়সূচী কত? এটা মূলত শুধুমাত্র ১০ বছর মেয়াদী এই পাসপোর্ট এর ডেলিভারির সময়সূচী নয়, বরং যেকোনো পাসপোর্ট পেতে হলে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত কার্যদিবস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এগুলো হলো–
- ২ কার্যদিবস– এটাকে সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময়সূচি বলা হয়। যদি আপনার অতিরিক্ত প্রয়োজন থাকে পাসপোর্ট এর সেক্ষেত্রে সুপার এক্সপ্রেস রিকুয়েস্টের মাধ্যমে খুব অল্প সময়সীমার মধ্যে ১০ বছর মেয়াদে বা যেকোনো সময় নির্ধারিত ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
- ৭ কার্য দিবস– এটাকে বলা হয় এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময়সূচী। মানে আপনার যদি মোটামুটি এক সপ্তাহের মধ্যে ই পাসপোর্ট এর দরকার পড়ে সে ক্ষেত্রে আপনার জন্য ৭কার্য দিবস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে এবং আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে এক্সপ্রেস ডেলিভারির সময়সীমা টি।
- ১৫ কার্যদিবস– এটা কি সাধারণত রেগুলার ডেলিভারির সময়সূচি বলে গণ্য করা হয়। মানে আপনি যদি 10 বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে থাকেন বা সুপারিশ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ১৫ দিনের মধ্যে তা আপনার কাছে ডেলিভারি করা হবে।
আর হ্যাঁ, বয়স সীমার কথা যদি বলেন তাহলে সাধারণত ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের উপরেই বয়সী আবেদনকারীরা শুধুমাত্র ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ফ্রি পরিষদের পদ্ধতি কি কি হতে পারে তা জানতে নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি পরিশোধ পদ্ধতি
আপনি একজন বাংলাদেশী হয়ে বাংলাদেশে থেকে ঘরে বসেই ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে পারবেন। কেননা বর্তমানে অনলাইন ফ্রি পরিষদের পরিষেবা চালু হয়েছে। এজন্য আপনাকে দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে প্রথমে অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
আর এই আবেদন প্রক্রিয়ার সময় পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয় যা অনলাইনে পরিশোধ করা যায় মোবাইল ব্যাংক, ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা কার্ড পেমেন্ট এর মাধ্যমে। শুধু তাই নয় এছাড়াও আপনি নির্দিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে চালান ফর্ম পূরণ করে এই দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি জমা করতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম
ইতিমধ্যে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে “পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম” সম্পর্কিত একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছি। এখান থেকে আপনি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে পারেন। তবে হ্যাঁ, গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা মাথায় রাখবেন। সেটা হলো – পাসপোর্ট এর ফি জমা দেওয়ার পর প্রাপ্ত রশিদ সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন পড়ে পরবর্তী সময়ে।
আপনি যখন আবেদন জমা দেবেন তার নির্দিষ্ট কিছু সময়ের পরে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তোলা, আঙ্গুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশের ছবি দেওয়ার প্রয়োজন হয়। যখন এই প্রত্যেকটি কার্যপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় তখন পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে যায় আপনার জন্য। যখন পাসপোর্ট এর সকল কার্যপ্রক্রিয়া সমাপ্ত হয় তখন পাসপোর্ট অফিস থেকে এটি সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে। তো যাইহোক আপনি যদি, ভিডিওর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম জানতে চান তাহলে সাজেস্কৃত ভিডিওটি এখনি দেখতে পারেন।
👇
১। অনলাইন (ekpay-এর মাধ্যমে): (Payment option: VISA, Master Card, American Express, bKash, Nagad, Rocket, Upay, Dmoney, OK Wallet, Bank Asia, Brack Bank, EBL, City Bank, UCB, AB Bank, DBBL, Midland Bank, MBL Rainbow)
২। অফলাইন: এ-চালানের মাধ্যমে দেশের সকল সরকারি অথবা বেসরকারি ব্যাংক থেকে পরিশোধ করা যাবে (ঘরে বসে নিজে অফলাইনে পেমেন্ট করতে ক্লিক করুন )।
১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে | ই পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু নথিপত্র যোগানের দরকার হয়। সেগুলো হলো–
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি (১৮-২০ বছরের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে)।
- পুরনো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এর কপি (যদি থাকে)।
- স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা থেকে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব সনদ।
- পেশা প্রমাণের জন্য স্টুডেন্ট আইডি বা চাকরির পরিচয়পত্রের কপি।
- বৈবাহিক অবস্থার প্রমাণ পত্র।
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য NOC / GO।
- পাসপোর্টের আবেদন ফি পরিশোধের রসিদ।
আবেদন প্রক্রিয়া: পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম অত্যন্ত সহজ। এর জন্য শুধুমাত্র আপনাকে একটি নতুন ক্রোম নিতে হবে। এরপর এই পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.epassport.gov.bd ভিজিট করতে হবে। অতঃপর আর কি কি করতে হবে জানতে হলে- “ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম তোলার নিয়ম” এবং “পাসপোর্ট এর জন্য আবেদনের নিয়ম” সম্পর্কিত আরো দুটি আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়ুন।
তো অডিয়েন্স বন্ধুরা, এই ছিল ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা এ-সম্পর্কিত আমাদের আজকের আলোচনা। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। সেই সাথে পাসপোর্ট সম্পর্কিত কোন বিষয়ে জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। সবশেষে বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে আলোচনার সমাপ্তি টানছি।
প্রশ্নোত্তর
১. নতুন পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ২০২৫?
✓ আপনি যদি ৫ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট করতে চান এবং পৃষ্ঠার সংখ্যা থাকে 48, সেক্ষেত্রে রেগুলার খরচ পড়বে ৪০২৫ টাকা। পাশাপাশি আরও যুক্ত হবে ডকুমেন্টস প্রিন্ট ও প্রত্যয়ন পত্র ১৫০ টাকা, যাতায়াত খরচ মোটামুটি ৪০০ টাকা। অতএব মোট খরচ (৪০২৫+১৫০+৪০০=৪৫৭৫ টাকা)
২. পাসপোর্ট রেনু করতে কি কি লাগে?
✓ পাসপোর্ট রেনু বলতে রিনিউ করা কে বোঝায়। অনেক সময় ইউজাররা তাড়াহুড়া করে এটি লিখে সার্চ করে থাকেন। যাই হোক আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট পুনরায় রিনিউ করতে চান সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিচের ডকুমেন্টগুলোর প্রয়োজন পড়বে। যথা –
- আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি
- পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রশিদ
- জাতীয় পরিচয় পত্র / অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এর মেইন এবং ফটোকপি
- সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে GO/NOC.
- রেজিস্ট্রেশন ফরম / সামারি পেজ
৩. পাসপোর্ট সংশোধন ফি কত?
✓ পাসপোর্ট সংশোধন করতে নতুন পাসপোর্ট ফি অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৪০২৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০৩৫০ টাকা প্রয়োজন হয়। তবে সংশোধনের জন্য এক্সট্রা কোন ফি প্রযোজ্য নয়। তবে ক্ষেত্র বিশেষে বা স্থানের উপর ভিত্তি করে কখনো কখনো কিছু টিপস হিসেবে টাকা নিতে পারে।
৪. পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?
✓ সাধারণত পাসপোর্ট তৈরি করতে যেসকল ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়ে সেই প্রত্যেকটি ডকুমেন্ট পাসপোর্ট সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। কেননা ঐ সকল কাগজপত্র দেখে আপনার আবেদনের পর পাসপোর্ট অফিস প্রদত্ত তথ্য যাচাই করবে। অতঃপর তা সংশোধন করে আপনাকে পুনরায় নতুন পাসপোর্ট প্রদান করবে।
৫. ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত?
✓ সাধারণত ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৫ এবং ১০ বছর হয়ে থাকে। এছাড়াও আবেদনকারীর পছন্দের উপর ভিত্তি করে তা বেশিও হতে পারে। তবে সচরাচর ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদী এই পাসপোর্ট বেশি নিয়ে থাকে ইউজাররা।