নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং কি কি ডকুমেন্টস লাগে?

বয়স ও পেশার ভিত্তিতে পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত নবজাতক থেকে শুরু করে ছয় বছর বয়সী অথবা তার থেকে বেশি বয়সী শিশুদের জন্য আবেদনের প্রয়োজনীয় নথিপত্রে সামান্য তারতম্যতা লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই রয়েছেন যারা নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করতে ইচ্ছুক।

আর বর্তমান বাংলাদেশে নবজাত শিশুর জন্য পাসপোর্ট তৈরি করা অত্যন্ত সহজ ও দ্রুত একটি প্রক্রিয়া হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মূলত এজন্য আপনাকে সঠিক প্রক্রিয়াটি জানতে হবে এবং নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং কি কি ডকুমেন্টস লাগে এ ব্যাপারে জেনে রাখতে হবে খুঁটিনাটি। তাই আসুন বিস্তারিত অবগত হই আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি থেকে। সাথে আরও জানতে পড়তে পারেন ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পিডিএফ ডাউনলোডের নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত। 

নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

কিভাবে করবেন শিশুর ই পাসপোর্ট, ই পাসপোর্ট করার সঠিক ও সহজ নিয়ম জানাবো আমরা। তবে তার আগে জেনে নিন, নবজাতক শিশুর ই পাসপোর্ট এর সুবিধা কি! আপনি যদি পাসপোর্ট নিয়ে কিছুটা অনুসন্ধান করেন তাহলে আপনার নজরে আসবে– ২০২০ সালের দিকে বিশ্বের ১১৯ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

 

আর সেই সময় থেকে সব বয়সের নাগরিকদের জন্য ই পাসপোর্ট এর সুবিধা দেওয়া হয়ে চলেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে। আপনি যদি আপনার বাচ্চার জন্য ই পাসপোর্ট করেন সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চার উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল হবে, দ্রুত ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া কার্যক্রমে সহযোগিতা লাভ করবেন, আপনার যেকোন ডেটা ম্যানেজমেন্ট সহজ হয়ে যাবে আপনার শিশুর বিষয় সম্পর্কে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন। 

তবে নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট এর জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। আবেদনের নিয়ম ও ই-পাসপোর্ট সংগ্রহের নিয়ম খুবই সহজ, যদি আপনি আমাদের দেওয়া ইনস্ট্রাকশন অনুসরণ করেন তাহলে আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট কালেক্ট করতে পারবেন।

rules for e-passport for newborn babies

আরো দেখুন- পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম

শিশুর পাসপোর্ট প্রক্রিয়া | বাচ্চাদের পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৫

নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করতে সবার প্রথমে ডকুমেন্ট হিসেবে জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে আবেদন ফরম। এর জন্য অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়ার সম্পর্কে জানতে হবে। যদি আপনি এই কাজটি অন্যের সহযোগিতা করে নিতে পারেন তবে আমরা বলবো ডিজিটাল এই যুগে আপনি নিজেই আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন অথবা আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করে এই কাজটি সেরে ফেলুন। যা যা করতে হবে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমরা স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করছি। 

নবজাত শিশুর ই – পাসপোর্ট করার ধাপসমূহ

প্রথমত: অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন। এর জন্য আপনাকে সরাসরি ভিজিট করতে হবে বাংলাদেশ পাসওয়াট ইমিগ্রেশন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.epassport.gov.bd তে। অতঃপর সেখানে নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করুন অপশন সিলেক্ট করে অনলাইন ফর্ম পূরণের সমস্ত কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে। এ সময় অবশ্যই প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো নির্ভুলভাবে লিখবেন। 

দ্বিতীয়ত: সমস্ত ইনফরমেশন প্রদান করার পরে আপনাকে ডকুমেন্ট আপলোড ও সাবমিশনের কার্যপ্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে হবে। এ সময় আপনাকে মনোযোগের সাথে সব ইনফরমেশন প্রদানের পরামর্শ দেবো আমরা। বারবার চেক করার পর যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে সাবমিশন কার্যপ্রক্রিয়া সমাপ্ত করবেন। 

তৃতীয়ত: যদি আপনি প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করে ফেলেন তাহলে তৃতীয় ধাপে এসে আপনাকে আপনার নবজাতক শিশুর ই পাসপোর্ট এর জন্য প্রদান করতে হবে পরিমাণ কৃত ফি, এখন প্রশ্ন হচ্ছে নবজাত শিশুর জন্য সাধারণত সেই হিসেবে আপনাকে কত টাকা অনলাইনে প

পেমেন্ট করতে হতে পারে। জানতে হলে এখনই পড়ুন ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি এবং পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি সম্পর্কিত অন্যান্য আরো দুটি আর্টিকেল। যা থেকে আপনি এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। 

চতুর্থত: অনলাইন আবেদন কার্যপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং ফি প্রদানের পর সাক্ষাৎকার ও বায়োমেট্রিক্স ডেটা প্রদান করতে হবে আপনাকে। যদিও পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়গুলো থেকে এটা জানা গেছে নবজাত শিশুর ক্ষেত্রে কোন বায়োমেট্রিক ডেটার প্রয়োজন নেই তবে পিতা-মাতার উপস্থিতি আবশ্যক । তাই অবশ্যই নির্ধারিত তারিখে এই পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তোলা ও ডকুমেন্ট যাচাই করানোর কাজ সমাপ্ত করতে হবে আপনাকে। 

যদি এই কাজগুলো আপনি সঠিকভাবে করতে পারেন তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সংগ্রহ করতে পারবেন আপনার নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট। আর আপনি নিশ্চয়ই এটা জানেন পাসপোর্ট যদি প্রস্তুত হয়ে যায় তাহলে এসএমএস অথবা ইমেইলের মাধ্যমে তা জানানো হয়ে থাকে। 

আর হ্যাঁ, নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করতে কত পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এই ব্যাপারে জানতে অনেকেই অতিরিক্ত আগ্রহ প্রকাশ করেন। মূলত এক্ষেত্রে বড় এবং ছোটদের সময়সীমা একই। মানে সাত থেকে১৫ কার্যদিবস অথবা জরুরী ক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে আপনার নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট আপনি হাতে পেতে পারবেন।

 

এখনো আসুন, নবজাত সন্তানদের পাসপোর্ট করনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে জানি খুঁটিনাটি। তবে আপনি চাইলে আরো জানতে পড়তে পারেন ই-পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে করণীয় কাজ ও প্রয়োজনীয় আরো কিছু সতর্কতা-র বিষয়ে। 

নবজাতকের পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ডকুমেন্ট লাগে | ১৮ বছরের নিচে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

নবজাতকের পাসপোর্ট করার জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়ে। যথা –

  • অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদপত্রের অনুলিপি। মনে রাখবেন বর্তমানে হাতে লেখা বা কম্পিউটারে মুদ্রণ করা জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র ব্যবহৃত হয় না। এর জন্য অনলাইনে নিবন্ধিত সনদপত্র সংগ্রহ করতে হবে আপনাকে। আর এটা শুধু পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে নয় মূলত বাংলাদেশের অন্যান্য আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনলাইন ডকুমেন্ট চাওয়া হয়ে থাকে। তাই অনলাইনে নিবন্ধিত জন্ম সনদপত্রটি সঙ্গে রাখবেন নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার সময়। 
  • মা-বাবার ভোটার আইডি কার্ডের অনুলিপি মানে স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি। নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট এর সময় বাবা-মায়ের প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয় পত্রের অনুলিপির প্রয়োজন হয়। তাই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোর মধ্যে এটিও একটি। 
  • থ্রি আর ছবি। আমরা জানি সাধারণত পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তোলা হয়ে থাকে। কিন্তু ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের ছবি তোলাটা অনেকটা অসুবিধার হয়ে দাঁড়ায় এ কারণে এদের ক্ষেত্রে ল্যাবে প্রিন্ট করা থ্রি আর সাইজের ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ড এর এক কপি ছবি আবেদনপত্রের সাথে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া দেওয়া হয়ে থাকে। অতএব আপনাকে নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলোর সাথে নিয়ে যেতে হবে ছবি। 
  • পাসপোর্ট ফি প্রদানের রশিদ। আপনি আপনার নবজাত শিশুর জন্য ই পাসপোর্ট করতে চান, এজন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন পাশাপাশি যে ফ্রি প্রদান করেছেন তার রশিদ বা সনদপত্রটি আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। যেটা সরাসরি অনলাইনে বাংলাদেশ সরকারের প্রাপ্তি বাতায়ন ই চালান ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যায়। অতঃপর আপনি যদি সেটা পূরণ করে নিকটস্থ যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকে জমা দেন এবং পাসপোর্ট ফি প্রদানের বা পরিশোধের চালান সংগ্রহ করেন তাহলে সেটা ডকুমেন্টগুলোর সাথে সংযুক্ত করে আপনাকে একসঙ্গে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। 

ব্যাস, সাধারণত এগুলোই নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। তবে আপনি যদি এ ব্যাপারে আরও ভালোভাবে জানতে চান তাহলে নিচের স্ক্রিনশট দেখতে পারেন। যা বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত। 

baby passport Document

 

নবজাত শিশুদের ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং নবায়ন 

সাধারণত নবজাত শিশুদের পাসপোর্ট গুলোর মেয়াদ পাঁচ বছরের হয়ে থাকে। তো মেয়াদ যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে নবায়নের জন্য এই একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনাকে পুনরায় আপনার নবজাত শিশুর জন্য ই আবেদন কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে এবং সংগ্রহ করতে হবে পাসপোর্ট। 

আর হ্যাঁ, নবজাত শিশুদের পাসপোর্ট করার বিষয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন করেন অনেক অডিয়েন্স বন্ধুরা। যেমন, নবজাত শিশুর পাসপোর্ট ফি কি বড়দের থেকে কম? হ্যাঁ অবশ্যই শিশুর পাসপোর্ট এর জন্য ফি বড়দের থেকে কম নেওয়া হয়ে থাকে। নবজাত শিশুর জন্য কি কি তথ্য দিতে হয়, জন্ম তারিখ নাম পিতামাতার তথ্য ইত্যাদি যাবতীয় কিছু দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে পাসপোর্ট তৈরি করার সময়।

ই পাসপোর্ট কোথায় ব্যবহার করা যাবে নবজাত শিশুদের গুলো, এর উত্তর হলো ই পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য। মানে একটি পাসপোর্ট দিয়ে প্রাপ্তবয়স্করা মূলত যা যা করতে পারে আপনার নবজাত শিশুর জন্য তৈরি করা ই পাসপোর্ট দিয়ে তাই তাই করতে পারবেন এবং যে কোন ক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করতে পারবেন। 

পরিশেষে: তো পাঠক বন্ধুরা, নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং কি কি ডকুমেন্টস লাগে এ সম্পর্কিত আলোচনার সমাপ্তি টানছি আজ এখানেই। যেহেতু বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাল প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল আর মানুষ সময়ের সাথে সাথে অনেক বেশি স্মার্ট তাই আপনি আগের মত বারবার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ঘুরাঘুরি না করেও আপনার শিশুর জন্য ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিতে পারেন। যদি এ-ব্যাপারে আরো কিছু জানার থাকে কমেন্ট করুন আর পাসপোর্ট সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

About Author

Setu Rani
Setu Rani is a professional blogger with expertise in passport and visa information. With a passion for travel, she shares insightful guides on international visa processes, passport services, and travel experiences. Her in-depth knowledge helps travelers navigate complex documentation with ease. When she's not writing, Setu explores new destinations and documents her journeys to inspire others.
Passport Online Copy Download
Passport

পাসপোর্ট অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম দেখুন ২০২৫

পাসপোর্ট অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। অনেক সময় দুর্ঘটনাবশত পাসপোর্ট হারিয়ে...

Passport

নবজাত শিশুর ই পাসপোর্ট করার নিয়ম এবং কি কি ডকুমেন্টস লাগে?

বয়স ও পেশার ভিত্তিতে পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত নবজাতক থেকে শুরু...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *