ব্যক্তির জাতীয়তা ও পরিচয় প্রমাণ করণের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হলো পাসপোর্ট। যারা বৈধ উপায়ে দেশের বাহিরে যেতে চান তাদের পাসপোর্টের প্রয়োজন পড়ে। আজকের নিবন্ধে আমরা জানাবো ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং কত বছর মেয়াদী পাসপোর্ট কত টাকা এ-সম্পর্কে খুঁটিনাটি। আসুন বিস্তারিত জানি।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ই পাসপোর্ট অর্থাৎ ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট ফি– মেয়াদ, পৃষ্টার সংখ্যা এবং ডেলিভারি সময়ের উপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে। আমরা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ফি এর তালিকা সংযুক্ত করছি নিচে। যা থেকে আপনি এক্রয়েড টাকার পরিমান জানতে পারবেন।
কেননা বর্তমানে আমাদের দেশে ই পাসপোর্ট প্রবর্তনের মাধ্যমে পাসপোর্ট প্রাপ্তি প্রক্রিয়া অনেক বেশি সহজ হয়েছে। এমনকি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনি ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
কিন্তু এর জন্য আপনাকে প্রদান করতে হবে ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ ও পৃষ্ঠার সংখ্যা অনুযায়ী ফি। কেননা এই দেশে ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৫ ও ১০ বছর করা হয়েছে এবং পৃষ্ঠার সংখ্যা ৪৮ ও ৬৪ করা হয়েছে।
তাই আপনি আপনার প্রয়োজন ও ভ্রমণের পরিমাণ অনুযায়ী পছন্দের পাসপোর্ট বেছে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সাবমিট করার মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবেন প্রয়োজনীয় নথিপত্রের একটি “ ই-পাসপোর্ট”।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ২০২৫
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ই পাসপোর্ট ফি কত এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। একেক জায়গায় একেক টাকার অ্যামাউন্ট দেওয়ার কারনে কেউ বুঝে উঠতে পারেন না আসলে কত টাকা খরচ পড়ে পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে! এজন্য আমরা পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি আজকের তালিকা। এখানে ই পাসপোর্ট এর সরকারি ফি কত থেকে কত টাকা তা সংযুক্ত করা হলো।
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ ও ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি
পাসপোর্ট পৃষ্ঠার সংখ্যা | ই-পাসপোর্ট এর মেয়াদ | ডেলিভারির সময়সীমা | ই-পাসপোর্ট ফি (ভ্যাট সহ) |
৪৮ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ২১ কর্ম দিবস (সাধারণ পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৩,৫০০ টাকা |
৪৮ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ১০ কর্ম দিবস (জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৫,৫০০ টাকা |
৪৮ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ২ কর্ম দিবস (অতীব জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৭,৫০০ টাকা |
৪৮ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২১ কর্ম দিবস (সাধারণ পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৫,০০০ টাকা |
৪৮ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ১০ কর্ম দিবস (জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৭০০০ টাকা |
৪৮ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২ কর্ম দিবস (অতীব জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৯,০০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ ও দশ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট ফি
পাসপোর্ট পৃষ্ঠার সংখ্যা | ই-পাসপোর্ট এর মেয়াদ | ডেলিভারির সময়সীমা | ই-পাসপোর্ট ফি (ভ্যাট সহ) |
৬৪ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ২১ কর্ম দিবস (সাধারণ পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৫,৫০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ১০ কর্ম দিবস (জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৭,৫০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠা | পাঁচ বছর | ২ কর্ম দিবস (অতীব জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ১০,৫০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২১ কর্ম দিবস (সাধারণ পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৭০০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ১০ কর্ম দিবস (জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ৯০০০ টাকা |
৬৪ পৃষ্ঠা | ১০ বছর | ২ কর্ম দিবস (অতীব জরুরী পাসপোর্ট স্ট্যাটাস) | ১২,০০০ টাকা |
বিশেষ দ্রষ্টব্য: অতীব জরুরী পাসপোর্ট অতএব কম সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য শুধুমাত্র সাহায্য করতে পারে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস। কেননা অতীব জরুরী পাসপোর্ট শুধু মাত্র আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাওয়া যায়। সরকারি চাকরিজীবীরা যাদের এনওসি অথবা পিআরএল সনদ প্রাপ্ত রয়েছেন তারা সাধারণ পেয়ে জমা দিয়ে এই জরুরী পাসপোর্ট এর সুবিধা পেতে পারেন। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে অবশ্যই বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম PDF
পাসপোর্ট ফি ও পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
দেখুন পাসপোর্ট ফি কত টাকা মানে ই পাসপোর্ট এর জন্য আপনার টোটাল কত টাকা ফি প্রদান করতে হবে এটা আমরা তালিকা আকারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছি। কিন্তু আপনি যদি পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে বলবো সাজেস্টক কৃত লিঙ্কে ভিজিট করুন। যেখানে পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি, ফ্রি প্রদানের মাধ্যম এবং নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণ করা হয়েছে। মাএ এক মিনিটে আপনি ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে পারবেন আমাদের ইনস্ট্রাকশন ফলো করলে।
আর হ্যাঁ, আমাদের ই পাসপোর্ট চেক ডট অনলাইন ওয়েবসাইটে পাসপোর্ট সংক্রান্ত ইনফো আর্টিকেল, ভিসা, পাসপোর্ট, পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত প্রশ্নাবলী নিয়ে অসংখ্য পোষ্ট পাবলিশ করা হয়েছে, যেগুলো থেকে আপনি পাসপোর্ট সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান পেতে পারেন।
তাই চোখ রাখতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে। আসুন এখন জেনে নেই– কিভাবে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ই পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে হয় এবং ফি হিসেবে কত টাকা দিতে হয় । এখানে আমরা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ফি এর তালিকা সংযুক্ত করছি যাতে করে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়।
বাইরের দেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা ধরা হয়?
আপনি যদি পাসপোর্ট সম্পর্কে একটু অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই এটা জানেন– বিদেশের অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন বা দূতাবাস থেকে ই পাসপোর্ট এর জন্য খুব সহজেই আবেদন করতে পারেন। আর যেহেতু পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৫ অথবা ১০ বছর তাই অবশ্যই এর পরবর্তী সময়ে আবারও রিনিউ করার প্রয়োজন পড়ে। তো এক্ষেত্রে ই পাসপোর্ট ফি কত টাকা হতে পারে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না!
সেখানে সাধারণত ওই সময় পাসপোর্ট এর ফি মার্কিন ডলার হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। আর ডলারের পরিমান নির্ভর করে পাসপোর্ট এর মেয়াদ পৃষ্ঠার সংখ্যা ও ডেলিভারির সময়ের উপর যেটা আমাদের বাংলাদেশেও ওই একই সিস্টেম। এখানে আমরা পাসপোর্ট এর ফি ডলার রেট হিসেবে সাজেস্ট করছি। যেটা আপনি বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে পেয়ে যাবেন।
শ্রমিক ও ছাত্রদের জন্য বিদেশে ই পাসপোর্ট ফি
আপনি যদি এই মুহূর্তে বিদেশে অবস্থান করেন এবং একজন শ্রমিক ও ছাত্র হিসেবে ই পাসপোর্ট করতে চান সে ক্ষেত্রে ইউএস ডলারের হিসাবে খরচ পড়বে ৩০ ডলার থেকে ২২৫ ডলার পর্যন্ত।
- পাঁচ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট এর সাধারন ফি ৩০ ডলার এবং জরুরী ফি ৪৫ ডলার।
- ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফী ৫০ ডলার এবং জরুরী ফি ৭৫ ডলার।
- পাঁচ বছর মেয়াদি ৬৪ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফি ১৫০ ডলার এবং জরুরী ফি ২০০ ডলার।
- দশ বছর মেয়াদি ৬৪ পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফি ১৭৫ ডলার এবং জরুরী ফি ২২৫ ডলার।
সাধারণত ছাত্রদের জন্য এবং শ্রমিকদের জন্য পাসপোর্ট এর ফি কমিয়ে রাখা হয়। তবে আপনি যদি অন্য প্রয়োজনে যান বা সেখানে অবস্থান করেন তাহলে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ই পাসপোর্ট ফি হিসেবে নিচে উল্লেখিত ফি কার্যকর করা হবে। তালিকাটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন।
- ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্টের সাধারণ ফ্রি ১০০ ডলার এবং জরুরী ফি ১৫০ ডলার।
- ৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফি ১২৫ ডলার এবং জরুরী ফি ১৭৫ ডলার।
- ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফি ১৫০ ডলার এবং জরুরী ফি ২০০ ডলার।
- ৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী এই পাসপোর্ট এর সাধারণ ফি ১৭৫ ডলার এবং জরুরী ফি ২২৫ ডলার।
তো পাঠক বন্ধুরা, আশা করছি এটা আপনাদের কাছে ক্লিয়ার যে ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে? কেননা আমরা আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে– ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে, ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে আপনি যদি জানতে চান ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ তাহলে বলবো আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই আর্টিকেলগুলো অনুসন্ধান করে পড়ুন। যেখানে সঠিক নির্দেশনা খুব সহজভাবে দেওয়া হয়েছে।
আমাদের শেষ কথা: পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং ই পাসপোর্ট এর ফি কত টাকা, এই নিয়ে আজকের আলোচনার সমাপ্তি টানছি এখানেই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।