পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ঘরে বসে – কি কি কাগজ লাগে ?

Apply for Police Clearance

আমরা জানি যে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে একটা সার্টিফিকেট, যেটাকে পুলিশ প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র বলা হয়। নিজ দেশের বাহিরে চাকরি, পড়ালেখা অথবা ভ্রমণ যে উদ্দেশ্যেই আমরা যাইনা কেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর প্রয়োজন পড়ে। বলতে পারেন পুলিশ প্রদত্ত এই সার্টিফিকেটের কোন বিকল্প নেই। 

কিন্তু কথা হচ্ছে, সরকারি এই নথি বা প্রত্যয়ন পত্র আমরা কিভাবে পেতে পারি! এর জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ফলো করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করতে হয়। আপনি যদি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ঘরে বসে করতে চান, তাহলেও পারবেন । এমনকি অন্য কারো সহযোগিতা নিয়েও এ-কাজটা করে নিতে পারবেন। 

কিন্তু এর জন্য আপনাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। তাহলে আসুন আজকের নিবন্ধ থেকে বিস্তারিত জানি, যাতে করে আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে পারেন কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। যদি আপনার কাছে একটা স্মার্ট ফোন থেকে থাকে এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকে তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আপনি নিজেই আবেদন কার্যপ্রক্রিয়া সেরে ফেলতে পারবেন। 

কিন্তু কথা হচ্ছে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বা প্রত্যয়নপত্র আসলে কি? আমরা এর আবেদন প্রক্রিয়ার সম্পর্কে জানানোর আগে অতি সংক্ষেপে উল্লেখ করছি– পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন কেন প্রয়োজন এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর ভ্যালু ও এই সার্টিফিকেট তৈরির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো কি কি সে সম্পর্কে। 

আসুন ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহের ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানি। এর পাশাপাশি আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আরও জানতে পড়তে বা দেখতে পারেন– ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এ-সম্পর্কিত আরেকটি পোস্ট। 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন কেন প্রয়োজন? 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট একজন ব্যক্তির অপরাধমূলক রেকর্ড আছে কিনা তা যাচাই এর জন্য ইস্যু করা হয়। আরেকটু ভিন্নভাবে বললে বলা যায়- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বলতে এমন একটি সরকারি নথি বা প্রত্যয়ন পত্র কে বোঝানো হয়, যা পুলিশ বিভাগ কর্তৃক ইস্যু করা হয় এবং এতে ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা বা অপরাধ মূলক রেকর্ড আছে কিনা তা উল্লেখ করা হয়। 

যখন কোন ব্যক্তি নিজ দেশ থেকে বাইরের দেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট বা ভিসা করে থাকেন তখন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হিসেবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার শর্ত আরোপ করে দেওয়া হয় । আর সেই শর্ত পূরণের জন্য অবশ্যই এই নথিপত্র যোগানের প্রয়োজন হয়। 

এছাড়াও আপনি যদি একটু রিসার্চ করেন তাহলে জানতে পারবেন– বিদেশে চাকরি পাওয়ার জন্য, উচ্চশিক্ষার জন্য, বিদেশে স্থায়ী বসবাসের জন্য বা বিদেশে ব্যবসা বাণিজ্যিক অনুমতি নেওয়া থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের প্রয়োজন পড়ে। এমনকি কখনো কখনো ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রয়োজনে ও আইনি কার্যকলাপেও প্রয়োজন হয় এই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রত্যয়ন পত্র বা সার্টিফিকেট। 

কিন্তু আজকের এই আলোচনা করার মূল কারণ হচ্ছে, পাসপোর্ট ভিসা করার সময় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নথিপত্র চাওয়া হয়, কিন্তু আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না বলে ঘাবড়ে যাই বা কোথায় থেকে এটা সংগ্রহ করবো এ বিষয়ে হাজারো প্রশ্ন মাথা ঘুরে! 

তাই সবার প্রথমে অসুন জানি– পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনের জন্য আপনাকে কি কি ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে এবং আপনি এর জন্য কিভাবে আবেদন করবেন? আর আবেদনের জন্য কোথায় যেতে হবে, এমনকি আবেদনের কতদিনের মধ্যে পেতে পারেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট!

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে কি কি কাগজ লাগে ২০২৫

Apply for Police Clearance

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে বা সার্টিফিকেটের জন্য অনলাইন অথবা অফলাইনে আবেদন করতে নিচের উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে। যথা –

  • পাসপোর্ট এর স্ক্যান কপি 
  • জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • অনলাইন আবেদন ফরমের প্রিন্ট কপি 
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি 
  • নাগরিক সনদের স্ক্যান কপি 
  • বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র 
  • ব্যাংক চালান এর স্ক্যান কপি 

পাসপোর্ট এর স্ক্যান কপি: বর্তমান পাসপোর্ট এর প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠার সুস্পষ্ট ফটোকপি লাগবে। আর যদি মেইন কপি আপনার কাছে থাকে সেক্ষেত্রেও চলবে। যদি আপনি অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করেন ঘরে বসে। 

জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র: এটা আমরা সবাই জানি– প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা অনলাইন জন্ম সনদের প্রয়োজন পড়ে। 

যারা প্রাপ্তবয়স্ক ভোটার আইডি কার্ড রয়েছে মানে নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে আপনি স্মার্ট কার্ড ধারণ করেছেন তারা এই ধরনের কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ব্যবহার করতে পারবেন।

আর যাদের বয়স ২০ বছরের নিচে তারা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে চাইলে বা যেকোনো প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র, যা অনলাইন তৈরিকৃত। 

অনলাইন আবেদন ফরম এর প্রিন্ট কপি: সঠিকভাবে পূরণ করা অনলাইন আবেদন ফরম প্রিন্ট অথবা ডাউনলোড করে রাখবেন। কেননা পরবর্তীতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন সম্পন্ন করার জন্য এটির ফটোকপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পরে। তাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এ কি কি কাগজ লাগে এই তালিকায় সংযুক্ত করছি অনলাইন আবেদন ফরমকে।

পাসপোর্ট সাইজের নিজের ছবি: বৈধ প্রক্রিয়ায় প্রায় এ-ধরনের যেকোনো কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদনে  সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন পড়ে। তাই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে অবশ্যই সাম্প্রতিক সময়ে তুলেছেন এমন ছবি কাছে রাখবেন। 

নাগরিক সনদের স্ক্যান কপি: অনেকেই এনআইডি কার্ড এবং নাগরিক সনদপত্র এক মনে করেন। নাগরিক সনদপত্র বলতে মূলত বোঝায় স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রাপ্ত নাগরিক সনদকে, যেটা মেম্বার এবং চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। তো অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হিসেবে এটাকেও সঙ্গে রাখতে হবে এই কাজে। 

বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র: পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করার সময় বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্রের জন্য নেওয়া হয়ে থাকে ইউটিলিটি বিল, ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অন্য কোন বৈধ ডকুমেন্ট যা বর্তমান ঠিকানা সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করতে পারবে। 

অতএব সবচেয়ে সহজ কাজ হবে এই সময় আপনার বাড়ির কারেন্ট বিল সংগ্রহ করে রাখা। মানে বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে জমা করবেন ইউটিনিটি বিল। 

ব্যাংক চালান এর স্ক্যান কপি: সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার নির্ধারিত অন্য কোন ব্যাংকে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে প্রাপ্ত চালানের স্ক্যান কপি সংগ্রহ করে রাখবেন। আর হ্যাঁ চালানে ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর অবশ্যই স্পষ্ট থাকতে হবে বিষয়টা লক্ষ্য রাখবেন। কেননা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর কাজে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট হিসেবে এটারও প্রয়োজন পড়ে। তো পাঠক বন্ধুরা, এখন আসুন আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে জানি।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন পদ্ধতি

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর আবেদন পদ্ধতি বা নিয়ম খুবই সহজ। এজন্য সরাসরি আপনাকে ভিজিট করতে হবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স pcc.police.gov.bd নামের ওয়েবসাইটে। যা অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এপ্লাইয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। 

অতঃপর  সেখানে নিবন্ধন করবেন। নিবন্ধন কার্যপ্রক্রিয়া শেষ করে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করলে আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন ফুলফিল করতে পারবেন। 

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার সহজ নিয়ম 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ঘরে বসে করতে চাইলে আপনাকে অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে। এর জন্য–

প্রথমত: সরাসরি ভিজিট করুন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ওয়েবসাইট হলো– pcc.police.gov.bd

দ্বিতীয়ত: রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করে সাজেস্ট করা ইনফরমেশন সঠিকভাবে পূরণ করে ক্লিক করুন registration বাটনে। 

তৃতীয়ত: আপনার মোবাইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে পুনরায় লগইন করুন। রেজিস্ট্রেশন কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদনের পর আপনি যদি উক্ত ওয়েবসাইট রিলোড দিয়ে থাকেন তাহলে লগইন অপশন দেখানো হবে। যেখানে আপনি রেজিস্ট্রেশন করার সময় নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন ওই একই নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। 

চতুর্থত: মেনুবার থেকে ক্লিক করুন apply অপশনে, সেখানে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে সাজেস্ট করা হবে অ্যাপ্লিকেশন ফরম। 

পঞ্চমত: এপ্লিকেশন ফর্ম সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। অতঃপর বারবার চেক করুন যাতে করে কোন ভুল তথ্য না দেওয়া থাকে। এরপরে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো স্ক্যান করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। তাই কেন কপি আপলোড করুন। 

ষষ্ঠমত: কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোডের পর প্রদান করুন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন ফি, যেখানে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় আপনি বিকাশ নগদ রকেট ও উপায়ের মাধ্যমে এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন. 

ব্যাস এতোটুকুই। শেষ ধাপে আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে ফ্রি পরিশোধ করার চালান কপি। এরপর চালানোর কপি আপলোড করে পেমেন্ট কনফার্ম করলেই আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন সম্পন্ন হবে। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য: বেশিরভাগ সময় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর সার্ভার ডাউন থাকে। তাই সবসময় ভোরের দিকে এই কাজটি করার চেষ্টা করবেন। এই মুহূর্তে আমরা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স অনলাইন আবেদনের ইন্সট্রাকশন ছবিসহ সাজেস্ট করতে পারছিনা, কেননা ওয়েবসাইট সার্ভার ডাউন। 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ফরম pdf

অনেকেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ফরম পিডিএফ ডাউনলোডের বিষয়ে জানতে চান। শুধুমাত্র এক ক্লিকে এটি সংগ্রহ করা সম্ভব। 

এর জন্য আপনাকে–

  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। 
  • লগইন কার্যপ্রক্রিয়া সম্পাদন করতে হবে 
  • অ্যাপ্লাই মেনুতে গিয়ে উপরে যে ইনস্ট্রাকশন গুলো দিয়েছি সেই অনুযায়ী আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে 
  • আবেদনের ফ্রি পরিশোধ করতে হবে 

যখন আপনি অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া এভাবে সঠিকভাবে সম্পন্ন করবেন তখনই অপশন আসে যে আপনি উক্ত ফরম ডাউনলোড করবেন কিনা। ডাউনলোড করলে ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করবেন কখনো কখনো প্রিন্ট অপশন এসে থাকে। যাইহোক আপনি যে কোনভাবে সংগ্রহ করতে পারবেন উক্ত ডকুমেন্ট। 

কিন্তু অনলাইনে বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করলে তার পিডিএফ ফরম সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে না। কেননা পরবর্তীতে আপনি ওই ওয়েবসাইটে গিয়ে খুব সহজেই তার চেক করে নিতে পারেন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট চেক বাংলাদেশ 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট চেক করতে অর্থাৎ অনলাইনে যাচাই করার পদ্ধতি হচ্ছে–

প্রথমত: পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা অতঃপর নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড সঠিকভাবে সাজেস্টকৃত বক্সে বসানো এবং ক্লিক করা সাইন ইন অথবা লগইন অপশনে। 

Apply for Police Clearance

দ্বিতীয়ত: ক্লিক করা My account অপশনে। এই অপশনে গেলে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে অ্যাপ্লিকেশন ইনফরমেশন নামের আরেকটি অপশন। যেখানে আবেদনের রেফারেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর এবং মোবাইল নম্বর প্রদান করে ক্লিক করতে হবে সার্চ বাটনে। 

Apply for Police Clearance

ব্যাস সঙ্গে সঙ্গে আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনটির বর্তমান অবস্থা প্রদর্শিত করা হবে। 

একইভাবে মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে যাচাই করা যায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এর বর্তমান অবস্থা। এজন্য সরাসরি আপনি–

  • আপনার মোবাইল অপশনে যান 
  • নতুন এসএমএস টাইপ করুন 
  • এসএমএস লিখুন উদাহরণে বলে দেওয়া এই ইনস্ট্রাকশনে pcc s 12567754 (নাম্বারটি হচ্ছে আবেদনের রেফারেন্স নাম্বার।)
  • অতঃপর এই এস এম এস পাঠিয়ে দিন 266969 এই নম্বরে। 

ব্যাস, ফিরতি এসএমএসে আপনাকে আপনার আবেদনটির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য তুলে ধরা হবে। 

আর হ্যাঁ, অনেকেই পাসওয়ার্ড ভুলে যান। সে কারণে পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান। তো আপনি যদি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন ইন করেন এবং পাসওয়ার্ড ভুলে যান সে ক্ষেত্রে ফরগট ইউর পাসওয়ার্ড অপশন এ ক্লিক করে খুবই সাধারণ কিছু ভাব পেরিয়ে তা পুনরায় রিসেট করে দিতে পারেন। 

যদি মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করতে চান সে ক্ষেত্রে নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর অর্থাৎ ২৬৯৬৯ এই নাম্বারে pcc PR লিখে এসএমএস পাঠান। কেননা ফিরতি মেসেজে নতুন পাসওয়ার্ড প্রদান করা হবে। এখন আসুন এই প্রয়োজনীয় নথিপত্র বা সার্টিফিকেট ডেলিভারির সময়, মেয়াদ এবং জিজ্ঞাসিত আরো কিছু প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে জেনে নেই।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারি সময় 

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ডেলিভারির সময় সাধারণত 7 থেকে 10 দিন। কিন্তু কখনো কখনো এর থেকে বেশি সময় লাগতে পারে। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতিতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহের জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে তা হাতে পেয়ে যাবেন। 

জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর

১. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে কি কি লাগে?

✓ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে একটি মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট সংযোগ এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লাগে। যেগুলো ইতোমধ্যে আমরা আলোচনায় উল্লেখ করেছি।

২. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কিভাবে নিব? 

✓ সাধারণত আবেদন বা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিবেন। আশা করছি ইতিমধ্যে আমরা যে বর্ণনা দিয়েছি এর মাধ্যমে আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর জন্য সঠিকভাবে আবেদন করতে পারবেন অনলাইনে। আর যদি সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিকটস্থ যে কোন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে তাদের মাধ্যমে এই আবেদনটি করে নিতে পারবেন।

৩. পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মেয়াদ কত দিন থাকে?

✓ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর মেয়াদ থাকে সর্বোচ্চ 90 দিন। মানে আপনি যদি বাইরের দেশে যাওয়ার জন্য এই ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন তাহলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে এই দেশ ছাড়তে হবে নয়তো আবারো নতুন করে এ প্রত্যয়ন পত্রটি তৈরি করতে হবে আপনাকে 

৪. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এটাস্টেশন কি?

✓ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এটাস্টেশন বলতে সাধারণত বোঝানো হয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (PCC) এর সত্যতা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া। এটি বিভিন্ন দেশে বা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন হতে পারে যখন তারা নিশ্চিত হতে চায় যে, আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আসল এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যু করা হয়েছে।

৫. কাতার যেতে কি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগে? 

✓ হ্যাঁ কাতার যেতেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগে। যা সাধারণত কাতারে পৌঁছে Qatar Ministry of Interior (MOI) বা Qatar CID অফিসে PCC জমা দিতে হয়। 

৬. কাতারে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে কতদিন সময় লাগে? 

✓ নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য যেমন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন করে ঠিক একইভাবে আপনি যখন বাহিরের দেশ থেকে নিজের দেশে আসবেন তখনও এই জরুরী কাগজটি সংগ্রহ করতে হয়। তাই যখন কাদার থেকে আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে যাবেন তখন মোটামুটি সময় লাগবে ৭ থেকে ১৫ কর্ম দিবস। আর যদি বড়জোর অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই করতে হয় সে ক্ষেত্রে ৩০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। 

৭. অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনের পূর্বে কি কি করণীয়? 

✓ অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনের পূর্বে করণীয় কাজ হচ্ছে, প্রত্যেকটি প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা এবং অনলাইন ফ্রি পরিষদের জন্য একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা রাখা। 

৮. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে কত টাকা লাগে? 

✓ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে সাধারণ প্রসেসিং এর সাধারণত ৫০০ টাকা জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। আর পেমেন্ট পদ্ধতি মোবাইল ব্যাংকিং এবং ব্যাংক পেমেন্ট। মানে আপনি বিকাশ নগদ রকেট যেকোনো মাধ্যমে এই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন বাংলাদেশ পুলিশের pcc.police.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে। 

৯. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কিভাবে চেক করা যায়? 

✓ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চেক করা খুবই সহজ একটি পদ্ধতি। যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চেক করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে ভিজিট করতে হবে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। অতঃপর chek status option এ ক্লিক করে আবেদনের রেফারেন্স নম্বর ও জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর বসিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে আপনি আপনার আবেদনকৃত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর বর্তমান স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। 

১০. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন বাতিল এর নিয়ম কি? 

✓ সাধারণত আবেদনকারীর বিরুদ্ধে থানায় কোন ফৌজদারি মামলা থাকলে, আবেদনকারীর ঠিকানায় কোন ধরনের ভুল তথ্য দেওয়া থাকলে অথবা প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন ও ডকুমেন্ট সাবমিট না করলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন বাতিল হয়। 

আবার অনেকেই রয়েছেন জানতে চান কিভাবে এই আবেদনটি বাতিল করতে হবে? অনলাইনে বাতিল করতে আপনাকে ভিজিট করতে হবে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অতঃপর আপনার আবেদন স্ট্যাটাস চেক করে আপনার আবেদনটি এখনো প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। 

এটা যদি দেখতে পান অতঃপর লোকাল থানায় গিয়ে লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে বাতিলের জন্য। মূল কথা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন বাতিল করতে হলে আপনাকে থানায় যেতে হবে এবং তাদেরকে এ বিষয়ে জানাতে হবে ও একটি লিখিত দলিল পেশ করতে হবে।

পরিশেষে: তো পাঠক বন্ধুরা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ঘরে বসে – কি কি কাগজ লাগে এই নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা এ পর্যন্তই। সম্পূর্ণভাবে বিস্তারিত বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। তবুও এর বাইরে যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানান। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

About Author

Setu Rani
Setu Rani is a professional blogger with expertise in passport and visa information. With a passion for travel, she shares insightful guides on international visa processes, passport services, and travel experiences. Her in-depth knowledge helps travelers navigate complex documentation with ease. When she's not writing, Setu explores new destinations and documents her journeys to inspire others.
Apply for Police Clearance
Info

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন ঘরে বসে – কি কি কাগজ লাগে ?

আমরা জানি যে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে একটা সার্টিফিকেট, যেটাকে পুলিশ প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র বলা হয়।...

cancel passport online application
Info

ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার নিয়ম এবং ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত লেখার পদ্ধতি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *