আপনি যখন নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করছেন বা পুরনো পাসপোর্ট রিনিউ করছেন, তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আসে। তা হলো “পাসপোর্ট পেশা কি দিব?” অতএব পেশা হিসেবে কি উল্লেখ করা উচিত সাজেস্টকৃত অপশনে!
অনেকেই এ বিষয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কারণ ভুল তথ্য দিলে ভবিষ্যতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আজকের পোস্টে আমরা কথা বলব- পাসপোর্টে পেশা কি দিব এবং এটিকে কেন্দ্র করে জিজ্ঞাসিত বিশেষ কিছু প্রশ্নের উত্তর, যা আপনার একাধিক সমস্যার সমাধান এনে দেবে।
পাসপোর্টে পেশা কি দিব?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনার বর্তমান চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট পেশা দেওয়া উচিত।
তাই যখন নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন অথবা পুরনো পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় আপনার সামনে একটি নির্দিষ্ট পেশা সিলেক্ট করার জন্য বলা হবে , তখন আপনি যে পেশাতে নিয়োজিত রয়েছেন তা সিলেক্ট করবেন।
কিন্তু সমস্যা হলো, অনেকেই এমন থাকেন যারা কোন পেশাতেই নিয়োজিত নেই। যদিও বলা হয়ে থাকে বর্তমান চাকরি শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট নির্বাচন করা উচিত। কিন্তু কোন পেশাটি উল্লেখ করলে ভবিষ্যতে ভিসা আবেদন বা অন্যান্য কাজে সুবিধা হবে?
তো এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে ধারাবাহিকভাবে আমরা উল্লেখ করব– কোন কোন পেশা পাসপোর্টে উল্লেখ করা যায় এবং পাসপোর্টে ভুল পেশা নির্বাচন করলে অর্থাৎ ভুল তথ্য দিলে কি সমস্যা হয়, সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কোন অপশনটি সিলেক্ট করা উত্তম এবং যারা ফ্রিল্যান্সার, ব্যবসায়ী বা শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের জন্য পাসপোর্ট এ কোন পেশাটি নির্বাচন করার জরুরি ইত্যাদি এ-ব্যাপারে খুঁটিনাটি।
পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে উত্তম পেশা কোনটি?
পাসপোর্ট করার সময় কি পেশা দেওয়া উত্তম, পাসপোর্ট পেশা কি দিব, পাসপোর্ট তৈরি বা পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় পাসপোর্ট পেশা নির্বাচনের বিষয়টি স্কিপ করা যাবে কিনা, এই সকল বিষয় নিয়ে অনেকেই অনেক রকম চিন্তা ভাবনা করেন।
সত্যি বলতে পাসপোর্ট আবেদনে পেশা দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি আপনি কোন পেশাদারী না হয়ে থাকেন অথচ ফরমালিটি মানার জন্য নিজের মর্জি মাফিক পেশা নির্বাচন করেন তাহলে পরবর্তীতে ঝামেলায় করবেন। এক কথায় না বুঝে পাসপোর্টে পেশা সিলেক্ট করার জন্য আপনাকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের ঝামেলা পোহাতে হবে।
কেননা পেশার উপর ভিত্তি করে কিছু প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে পাসপোর্ট তৈরির সময়। ফলে আপনি সহজে তাদের হাতে ধরা পড়বেন মিথ্যা ইনফরমেশন দেওয়ার কারণে।
তাই আপনার প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে “আপনি এই মুহূর্তে যে পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন পাসপোর্টে পেশা হিসেবে তা নির্বাচন করুন”।
বেকার অথবা স্টুডেন্ট হলে পাসপোর্টে পেশা কি দিব?
যদি আপনি ছাত্র অবস্থায় পাসপোর্ট তৈরি করতে চান অথবা বেকার থেকে থাকেন সেক্ষেত্রে পাসপোর্টে পেশা সিলেক্ট করতে হবে ব্যাচেলর/আন-এমপ্লয়েড অথবা স্টুডেন্ট।
অনেকেই মনে করেন পাসপোর্ট করার সময় একটি স্ট্যান্ডার্ড পেশা নির্বাচন করলে তার সুবিধা পাওয়া যাবে। তাই পাসপোর্ট করার সময় কি পেশা দেওয়া উত্তম এই ধরনের প্রশ্ন করেন। কিন্তু সত্যি এটাই আপনি যে কাজে নিয়োজিত রয়েছেন আপনাকে সেটাই সিলেক্ট করতে হবে।
যেমন আপনি যদি বেকার হন তাহলে আনএমপ্লয়েড অথবা ব্যাচেলর সিলেক্ট করতে হবে। আর স্টুডেন্ট হলে স্টুডেন্ট অপশন সিলেক্ট করতে হবে। পাশাপাশি পূর্বের কোন সার্টিফিকেট জমা দেওয়া লাগতে পারে প্রমাণপত্র হিসেবে। এটা মূলত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার শর্তাবলীতে উল্লেখ থাকে।
কিন্তু কথা হচ্ছে– আপনি বেকার পাশাপাশি আপনি পড়াশোনা করেননি মানে আপনার কোন প্রকাশ সার্টিফিকেট নেই। অথচ আপনি বাহিরের দেশে যাবেন বলে পাসপোর্ট করছেন। সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট করার সময় কি পেশা দেওয়া উত্তম? পাসপোর্ট পেশা কি দিব সেটা নিয়ে চিন্তিত তাইতো?
এক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাচেলর, আনইপ্লয়েড অথবা লেবার অপশন সিলেক্ট করতে হবে। আমাদের মতে আপনি সিলেক্ট করবেন শ্রমিক অর্থাৎ Labour, যা পরবর্তীতে আপনার কোন ধরনের সমস্যার কারণ হবে না।
একইভাবে আপনি যদি বয়স্ক হয়ে থাকেন অর্থাৎ পূর্বে চাকরি করেছেন বর্তমানে কোন চাকরিতে নিযুক্ত নেই সেক্ষেত্রে রিটায়ার্ড প্রাপ্ত ব্যক্তিরা পাসপোর্ট পেশা দিবেন আননন অথবা আন ইমপ্লয়েড নির্বাচন করবেন।
পাসপোর্ট পেশা চেক | পাসপোর্টে কি কি পেশা থাকে?
পাসপোর্ট ভিসা চেক করা খুব সহজ একটি প্রক্রিয়া। যা আপনি সরাসরি পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে চেক আউট করতে পারবেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না বাংলাদেশী পাসপোর্টে পেশা হিসেবে কি কি পেশা উল্লেখ করা থাকে। তাই এ ব্যাপারে খোঁজাখুঁজি করেন।
সাধারণত বাংলাদেশী পাসপোর্ট এর উল্লেখযোগ্য কিছু পেশা হিসেবে থেকে থাকে–
- Government Service (সরকারি চাকরিজীবী)
- Private Service (বেসরকারি চাকরিজীবী)
- Businessman (ব্যবসায়ী)
- Student (শিক্ষার্থী)
- Housewife (গৃহিণী)
- Retired (অবসরপ্রাপ্ত)
- Doctor (চিকিৎসক)
- Engineer (প্রকৌশলী)
- Lawyer (আইনজীবী)
- Teacher (শিক্ষক)
- Journalist (সাংবাদিক)
- Farmer (কৃষক)
- Self-employed (স্বনির্ভর পেশাজীবী)
- Driver (চালক)
- Unemployed (বেকার)
- Technician (প্রযুক্তিবিদ)
- Freelancer (ফ্রিল্যান্সার)
- Artist (শিল্পী)
- Social Worker (সামাজিক কর্মী)
- Immigrant (প্রবাসী)
তাই আপনি যে কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন পাসপোর্ট তৈরি করার সময় তা সঠিকটা নির্বাচন করবেন। আর যদি নির্দিষ্ট পেশা না থাকে তাহলে self employed/unemployed নির্বাচন করবেন। ব্যাস এতটুকুই।
বাচ্চাদের পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পেশা কি দিব?
যদি আপনার বাচ্চা শিশুর জন্য পাসপোর্ট করেন সে ক্ষেত্রে ফরমালিটি মেইনটেইন করার জন্য সিলেক্ট করতে পারেন others অপশনটি। কেননা বাচ্চাদের পাসপোর্ট আবেদনে পেশা কোন প্রভাব ফেলে না। তাই কোন প্রকার ঝামেলার সম্মুখীন হতে হবে না এ নিয়ে।
আর যদি বলেন পিতা-মাতার পেশার কি দেওয়া উচিত বা কি দেবেন, সে ক্ষেত্রে মানানসই একটি পেশা সিলেক্ট করলেই হবে। যেটা আপনার বাবা করছেন। তবে আমরা সাজেস্ট করব unemployed সিলেক্ট করার জন্য। আর মায়ের জন্য সিলেক্ট করতে পারেন যদি হাউজ ওয়াইফ অপশন থেকে থাকে এই অপশনটি।
তো পাঠক বন্ধুরা, বাচ্চাদের, মা বাবা অথবা নিজের পাসপোর্ট করার সময় পাসপোর্ট পেশা কি দেবেন আশা করছি এই প্রশ্নটির উত্তর মিলেছে। যাইহোক, যদি পাসপোর্ট নিয়ে জটিল কোন সমস্যায় পড়েন আর এ ব্যাপারে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে অন্যান্য পোস্টগুলো এক নজরে দেখে নিন।
কেননা ইতিমধ্যে পাসপোর্ট তৈরির নিয়ম থেকে শুরু করে এমআরপি পাসপোর্ট রিনিউ অথবা কোন পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কিত বেশ কিছু আর্টিকেল ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। তো সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন, পরবর্তীতে আবারো নতুন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সবশেষে সবাইকে জানাই আল্লাহ হাফেজ।