ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানুন

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন

ই-পাসপোর্টের আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর তা হাতে আসার ক্ষেত্রে অন্যতম একটি যাচাইয়ের ধাপ হলো ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন। ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন কীভাবে করা হয়? এই ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে কত টাকার প্রয়োজন হতে পারে? এবং এই কাজটি শেষ হতে মোট কত দিন সময় লাগতে পারে? এ সংক্রান্ত তথ্য অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে।

আর আপনি যদি পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে চান, তবে আজকের এই পোষ্ট থেকে সেই সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।

পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন কী?

পুলিশ ভেরিফিকেশন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে পুলিশ একজন ব্যক্তির দেওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করে। ই-পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের সময়, স্থানীয় থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরীক্ষা করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • আবেদনকারীর জাতীয়তা (যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক কি না)
  • স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা
  • কর্মসংস্থান
  • পারিবারিক অবস্থা
  • আদালতে তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা রয়েছে কি না

এছাড়া, যদি তার বিরুদ্ধে পূর্বে কোনো মামলা থাকে, তাহলে সেই মামলার খারিজ হওয়ার তথ্যও যাচাই করা হয়। এই তথ্যগুলো নিশ্চিত করতে পুলিশ যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে, যাতে আবেদনকারী সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়।

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন প্রয়োজন হয়?

পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। কিন্তু এই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন নেওয়া হয়?

ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করার পেছনে অনেকগুলো ভিন্ন কারণ রয়েছে। সেই কারণগুলোর মধ্যে থেকে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ নিচে তুলে ধরা হলো:

  • যে ব্যক্তি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন, তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক কি না, তা যাচাই করার জন্য।
  • আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা রয়েছে কি না, অথবা তিনি কোনো ফৌজদারি মামলার আসামি কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য।
  • পাসপোর্ট আবেদন করার সময় আপনি যে সমস্ত তথ্য দিয়েছেন, সেই সমস্ত তথ্য সঠিক কি না, অর্থাৎ তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য।
  • আবেদন করার সময় আপনার দেওয়া স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা যাচাই করার জন্য।
  • পূর্বের পাসপোর্টে থাকা তথ্য (যেমন বয়স পরিবর্তন, কিংবা পিতা-মাতা অথবা নিজের নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা হয়েছে কি না) যাচাই করার জন্য।

এই সমস্ত কারণ তদারকির জন্যই পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয় এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাক্রমে পার হতে হয়। সেজন্য, আপনার দেওয়া এই সমস্ত তথ্যে যদি কোনো জটিলতা না থেকে থাকে, তাহলে আপনি এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া খুব সহজেই উত্তীর্ণ হতে পারবেন।

পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে কি কি লাগে?

আপনি যদি খুব স্বাভাবিকভাবেই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে চান, তাহলে বিভিন্ন রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন করার জন্য যে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্যের দরকার হবে, সেগুলো সম্পর্কিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো:

  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড।
  • নাগরিকত্ব সনদ।
  • পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • মহিলাদের ক্ষেত্রে, স্বামী থাকলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র।
  • বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, বা টেলিফোনের বিলের কপি।
  • যদি বাসা ভাড়া থাকে, তাহলে বাসাভাড়া চুক্তিপত্র।
  • পূর্বে কোনো মামলা থাকলে, সেই মামলার খারিজ হওয়ার প্রমাণপত্র।
  • যদি ভূমিহীন হন, তাহলে সেই সম্পর্কিত কাগজপত্র।

উপরে উল্লেখ করা সমস্ত তথ্য যদি আপনার কাছে প্রস্তুত থাকে, তাহলে আপনি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এছাড়া, পুলিশ ভেরিফিকেশন করার জন্য যে নির্দিষ্ট নিয়মগুলো রয়েছে, সেগুলো মেনে আপনি যখন ভেরিফিকেশন করতে যাবেন, তখন এই সমস্ত তথ্য অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে।

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে কত সময় লাগে?

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সাধারণত দুই থেকে তিন দিন সময় নিতে পারে, তবে কখনো কখনো কিছু জটিলতার কারণে এটি আরও বেশি দিন চলতে পারে। সাধারণত, পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া ১৯ থেকে ২০ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়।

যদি আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দ্রুত সম্পন্ন হয় এবং রিপোর্ট সরাসরি ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে পাঠানো হয়, তাহলে পাসপোর্ট অফিসের একজন সহকারী পরিচালক বা উপ-পরিচালক আপনার কাগজপত্র দ্রুত পরীক্ষা করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন। এতে করে পুরো প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে।

পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরেও যদি আপনার অনলাইন স্ট্যাটাস দীর্ঘ সময় ধরে পরিবর্তন না হয়, তবে আপনি Hello SB মোবাইল অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপটিতে আপনার পাসপোর্টের রেফারেন্স নম্বরসহ অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব। এভাবে অভিযোগ জানালে আপনার সমস্যাটি দ্রুত সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করার নিয়ম

পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পর পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চলাকালে যখন আপনি আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস যাচাই করবেন, তখন সম্ভবত আপনি “Enrollment Pending SB Police verification” লেখাটি দেখতে পাবেন। এর অর্থ হলো, আপনার পাসপোর্টটি বর্তমানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষমাণ।

এর ঠিক পর, আপনার স্থায়ী ঠিকানার স্থানীয় থানার একজন এসআই (সাব-ইন্সপেক্টর) সাধারণত দুই থেকে চার কার্যদিবসের মধ্যে আপনাকে ফোন করবেন। তারা আপনার সম্পর্কে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করতে পারেন এবং প্রয়োজনে সরাসরি থানায় এসে দেখা করতেও বলতে পারেন। এই সাক্ষাতের সময়, আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যেতে হবে, যেমন:

  • পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি (যদি থাকে)
  • নাগরিক সনদ
  • জাতীয় পরিচয়পত্র
  • যদি পূর্বে কোনো মামলা থাকে, তাহলে সেই মামলার খারিজ সংক্রান্ত নথি।

সবগুলো কাগজপত্রের মূল কপি এবং ফটোকপি দুটোই সাথে নিয়ে যাওয়া ভালো, কারণ থানায় ফটোকপিগুলো জমা দিতে হতে পারে।

নিয়ম জেনে নিনঃ পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক

ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য কিছু করণীয়:

  • সঠিক তথ্য প্রদান: পুলিশের কাছে সর্বদা সঠিক তথ্য দিন। মনে রাখবেন, ভুল তথ্য দিলে আপনার পাসপোর্টের পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত বা বাতিলও হতে পারে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ: আপনার প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ঠিকঠাক সংগ্রহ করুন। কাগজপত্রের সামান্য ঘাটতিও প্রক্রিয়াটিকে দীর্ঘায়িত করতে পারে।
  • পুলিশের সাথে সহযোগিতা: পুলিশ যখন আপনার কাছে কোনো কিছু জানতে চাইবে, তখন তাদের সাথে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করুন এবং সঠিকভাবে উত্তর দিন।

সাধারণ নিয়মানুযায়ী, পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য কোনো টাকা দিতে হয় না। যদি কোনো কর্মকর্তা আপনার কাছে টাকা দাবি করেন, তবে সেটি এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে, যদি আপনি খুব দ্রুত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট পেতে চান, তাহলে হয়তো কিছু টাকা খরচ করতে হতে পারে— কিন্তু এই কাজটি বিশেষভাবে বা কোনোভাবেই সুপারিশ করা হয় না।

আবেদনের পরে পুলিশ ভেরিফিকেশন যেভাবে যাচাই করবেন?

আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থা ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষমাণ (পেন্ডিং) আছে কি না, তা খুব সহজেই জানতে পারবেন। আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট আবেদনটির স্ট্যাটাস চেক করেন, তাহলেই এই তথ্যটি পেয়ে যাবেন।

পাসপোর্ট চেক করার সময় যদি আপনি স্ক্রিনশটের মতো কোনো নির্দিষ্ট স্ট্যাটাস দেখতে পান, তবে বুঝতে হবে যে আপনার পাসপোর্টটি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষায় আছে। অথবা, স্ট্যাটাস চেক করার সময় একটি বিশেষ মেসেজও আপনি দেখতে পেতে পারেন।

Enrolment Pending SB Police verification. Dear, Your e-Passport application is pending for SB Police verification.

যদি আপনি উপরের নির্দিষ্ট মেসেজটি দেখতে পান, তবে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার পাসপোর্টটি বর্তমানে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় আছে।

ঢাকা মেট্রোয়ের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন

এছাড়াও, আপনি যদি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে থেকে থাকেন, তাহলে আপনি নিজেই আপনার ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন স্ট্যাটাস সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। এবং আপনি দেখে নিতে পারবেন কোন তদন্ত কর্মকর্তা আপনার ভেরিফিকেশনের দায়িত্বটি হাতে পেয়েছেন।

এক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে আপনি যদি ভেরিফিকেশন স্ট্যাটাস যাচাই করতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করতে হবে।

পাসপোর্ট ভেরিফাই ➡️ https://www.immi.gov.bd/Passport-Verify

উপরে উল্লিখিত লিংকে ভিজিট করার পর, আপনি আপনার পাসপোর্ট স্লিপ নাম্বার এবং জন্মতারিখ প্রদান করার মাধ্যমে আবেদনটি যাচাই করে নিতে পারবেন। এভাবেই, উপরে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে ঢাকা মেট্রোপলিটনের বাসিন্দারা ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত সব তথ্য সহজে জেনে নিতে পারেন।

নেগেটিভ পুলিশ ভেরিফিকেশন কেন আসে?

আপনার ই-পাসপোর্ট পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের রিপোর্ট কিছু কারণে নেগেটিভ আসতে পারে। প্রথমে আপনার ভাবা উচিত, আপনি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সবকিছু সঠিকভাবে সম্পন্ন করেছেন কি না। যদি আপনার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে আপনি এর বিরুদ্ধে আবেদন করে সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

তাহলে, আসুন জেনে নিই, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নেগেটিভ আসার প্রধান কারণগুলো কী কী:

  • ঠিকানা ভুল: আপনার দেওয়া ঠিকানা যদি সঠিক না হয় অথবা আপনার বাসায় কেউ যদি আপনাকে শনাক্ত করতে না পারে, তাহলে পুলিশ ভেরিফিকেশন নেগেটিভ হতে পারে।
  • বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী না পাওয়া: পুলিশ যদি আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী আপনাকে খুঁজে না পায়, তবে সেটিও নেগেটিভ রিপোর্ট আসার একটি বড় কারণ হতে পারে।
  • ফৌজদারী মামলা: আপনার বিরুদ্ধে যদি কোনো ফৌজদারী মামলা চলমান থাকে, তাহলে তা পুলিশ ভেরিফিকেশনে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করবে।
  • পূর্ববর্তী মামলার খারিজের তথ্য প্রদান না করা: আপনার বিরুদ্ধে যদি আগে কোনো মামলা থেকে থাকে এবং সেটি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরও সেই খারিজের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় জমা না দেওয়া হয়, তবে ভেরিফিকেশন নেগেটিভ হবে।
  • ভুল তথ্য প্রদান: যদি আপনি আবেদনের সময় যেকোনো ধরনের ভুল তথ্য দেন, তবে সেটিও নেগেটিভ রিপোর্টের কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার পেশার তথ্য ভুল হয়, তবে সেটিও সমস্যা সৃষ্টি করবে।

এই বিষয়গুলো মনে রাখলে, আপনি আপনার আবেদন প্রক্রিয়া আরও নিশ্চিত করতে পারবেন।

পাসপোর্ট নেগেটিভ পুলিশ ভেরিফিকেশন আসলে করণীয় কি?

প্রথমত, আপনাকে জানতে হবে রিপোর্টে নেগেটিভ আসার কারণ কী। সাধারণত, আদেশে সেই কারণ উল্লেখ করা থাকে। যখন আপনি কারণটি জানবেন, তখন বুঝতে পারবেন আপনার আবেদনে কোন ধরনের ভুল হয়েছে বা কোন কাগজপত্রের অভাব রয়েছে।

এরপর, আপনি ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। যদি আপনার আবেদনপত্রে কোনো ভুল থাকে, তবে সেটি ঠিক করুন। আর যদি কোনো কাগজপত্রের অভাব থাকে, তাহলে সেগুলো সংগ্রহ করুন।

ভুল সংশোধন করার পর, আবার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। এই নতুন আবেদনপত্রে সংশোধিত তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করে জমা দিন।

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন এর জন্য পুনরায় আবেদন

যদি আপনি ভেরিফিকেশনের জন্য পুনরায় আবেদন করতে চান, তাহলে আপনাকে একটি দরখাস্ত লিখে পাসপোর্টের সহকারী পরিচালককে পাঠাতে হবে। দরখাস্তে অবশ্যই আপনার পাসপোর্টের রেফারেন্স নম্বর বা অ্যাপ্লিকেশন আইডি, আপনার জন্ম তারিখ, এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ:

বরাবর,

সহকারী পরিচালক,

আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস,

বিষয়: ভুল সংশোধন করে পুনরায় পুলিশ তদন্তের আবেদন।

জনাব,

অভিনন্দনসহ জানাচ্ছি, আমি ……….., পিতা: ……….., মাতা: ……….., গ্রাম: ………., ডাকঘর: …………, থানাঃ …………, জেলাঃ ………..। আমার পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ নম্বর 4001-0000…।

আমার ই-পাসপোর্ট আবেদনের সময় …………….. বিষয়ে ভুল হওয়ার কারণে পুলিশ তদন্ত নেগেটিভ এসেছে।

এ অবস্থায়, অনুগ্রহ করে উক্ত আবেদনের ……………. সংশোধন করে পুনরায় পুলিশ তদন্তে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আপনার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ।

বিনীত,

[আপনার নাম]

মোবাইল নম্বর: [আপনার মোবাইল নম্বর]

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে কত টাকা লাগে?

অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ পাওয়ার জন্য আপনাকে ৫০০ টাকা ফি জমা দিতে হবে। এই ফি আপনি ট্রেজারি চালান অথবা অনলাইনে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারেন। ট্রেজারি চালানের ক্ষেত্রে, নিকটস্থ বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় (১-৭৩০১-০০০১-২৬৮১) এই কোডটি ব্যবহার করে ৫০০ টাকা জমা দেওয়া যাবে।

ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন অথবা সাধারণ পাসপোর্ট চেক করার জন্য কোনো ধরনের ফি দিতে হয় না, এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়। আপনি যদি ভেরিফিকেশন করতে আসা অফিসারকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু টাকা দিতে চান, তবে সেটি সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে মনে রাখবেন, পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনে নির্ধারিত কোনো ফি নেই।

সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

পুলিশ ভেরিফিকেশন কত দিনে সম্পন্ন হয়?

সাধারণত, পুলিশ ভেরিফিকেশন ২ থেকে ৩ দিন সময় নিতে পারে, তবে কিছু জটিলতার কারণে এটি ১৯ থেকে ২০ দিন পর্যন্তও লাগতে পারে।

কোন কারণে পুলিশ ফোন না দিলে কি করব?

কোন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে যদি আপনার নাম্বারে কল না আসে তাহলে নিকটস্থ পুলিশ অফিসে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে চলে যেতে হবে।

কি কারণে আবেদনকারীকে পুলিশ অফিসারদের টাকা দিতে বলা হয়?

কখনো কখনো অফিসাররা টাকার দাবি করতে পারেন, তবে এটি অবৈধ এবং অফিসিয়াল প্রক্রিয়ার অংশ নয়। এটি এড়িয়ে চলা উচিত।

কিভাবে দ্রুত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট পাওয়া যাবে?

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট দ্রুত পাওয়ার জন্য টাকা খরচ করা যেতে পারে, তবে এটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ করা হয়নি।

যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে কি করতে হবে?

নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে প্রথমে কারণ জানতে হবে, তারপর ভুল সংশোধন করে পুনরায় আবেদন করতে হবে।

পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় কি ধরনের তথ্য যাচাই করা হয়?

পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জাতীয়তা, পিতার নাম, জন্ম তারিখ, বৈবাহিক অবস্থা, এবং পূর্বের মামলার তথ্য যাচাই করা হয়।

লেখকের শেষ মতামত

পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা আবেদনকারী ব্যক্তির পরিচয় এবং দাখিল করা নথিপত্রের সঠিকতা নিশ্চিত করে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখে।

যদিও এই প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তবুও এটি আমাদের দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ। তাই, সঠিক তথ্য প্রদান ও যথাযথ সহযোগিতা করলে আমরা এই প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও দ্রুত করতে পারি। সবশেষে, এই যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি আমাদের সকলের জন্য একটি নিরাপদ ভ্রমণের নিশ্চয়তা দেয়।

About Author

সিফাত শিকারী
আমি সিফাত শিকারী। বেশ কয়েকবছর পাসপোর্ট সেবা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমার লক্ষ্য হল পাসপোর্ট সেবা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সাধারণ মানুষকে জানানো, যাতে তারা সহজে পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়া বুঝতে এবং সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারে। epassportcheck.online এর মাধ্যমে আমি আমার অভিজ্ঞতা এবং তথ্য শেয়ার করে সাহায্য করতে চাই।
ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
Passport

ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানুন

ই-পাসপোর্টের আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর তা হাতে আসার ক্ষেত্রে অন্যতম একটি যাচাইয়ের ধাপ হলো...

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে এবং ই পাসপোর্ট সংশোধন ফি
Passport

জানুন পাসপোর্ট সংশোধন করতে কি কি লাগে এবং ই পাসপোর্ট সংশোধন ফি সম্পর্কে

পাসপোর্ট সংশোধন বলতে সাধারণত আপনার পাসপোর্টে ছাপা তথ্যগুলোর মধ্যে যেকোন ভুল, অসামঞ্জস্য বা অপরিবর্তনীয় তথ্যকে...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *